"যাকাত" এর ফজিলত।



হযরত আবু আইয়ূব (রা.) থেকে বর্ণিতঃ- জনৈক সাহাবি নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, ‘আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে। তাঁর সঙ্গে অপর কোনো কিছুকে শরিক করবে না। সালাত আদায় করবে, যাকাত আদায় করবে, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখবে। অন্যত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহর সঙ্গে অন্য কিছুকে শরিক করে না, সালাত আদায় করে, যাকাত আদায় করে এবং কবিরা গুনাহ হতে নিজেকে রক্ষা করে, তার জন্য জান্নাত রয়েছে।
অন্যত্র হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ- আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলিহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় যে কোনো জিনিসের এক জোড়া বস্তুও দান করে, তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ হতে আহবান করা হবে। হে আল্লাহর বান্দা, এ (দরজা) তোমার জন্য উত্তম। (বস্তুত) জান্নাতের অনেক দরজা আছে। যে সালাত আদায়কারী হবে তাকে সালাতের দরজা হতে আহবান করা হবে, যে ব্যক্তি জিহাদকারী হবে তাকে জিহাদের দরজা হতে আহবান করা হবে, যে ব্যক্তি সিয়াম পালনকারী হবে তাকে ‘রাইয়্যান’ নামক দরজা হতে আহবান করা হবে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা যে সুদ দিয়ে থাক, আল্লাহর দৃষ্টিতে তা ধনসম্পদ বৃদ্ধি করে না। যাকাত সম্পদ বৃদ্ধি করে তোমরা যে যাকাত দিয়ে থাক,আল্লাহর সন্তষ্টি কামনা করে (তা-ই বৃদ্ধি পায়) তারাই বহুগুন সম্পদ প্রাপ্ত এবং যাকাত আদায়কারী আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত হয়। যাকাত সম্পদকে পবিত্র করে। সম্পদের যাবতীয় অকল্যাণ দূর হয়। যাকাত আদায়কারী আল্লাহর পথে জিহাদকারীর সমতুল্য সওয়াব পায়।
যাদের ওপর যাকাত ফরযঃ-
১.মুসলমান হওয়া।
২.প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া।
৩.জ্ঞানবান হওয়া।
৪.স্বাধীন হওয়া।
৫.নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হওয়া।
৬.সম্পদের পূর্ণ মালিকানা থাকা।
৭.মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত হওয়া।
যাকাত আদায় না করার পরিণতিঃ-
ইহকালীন শাস্তি, আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হওয়া, আল্লাহ ও তার রাসূলের পৃষ্টপোষকটা হারানো, জাতীয় জীবনে বিপর্যয় নেমে আসা, পরকালীন শাস্তি, যাকাত প্রদান না করা জাহান্নামে প্রবেশের কারণ, যারা যাকাত প্রদান করেনা তারা অভিশপ্ত, ধনসম্পদ আগুনে গরম করে সেঁক দেয়া হবে, কিয়ামতের দিন উক্ত সম্পদ বিষধর সাপে পরিনত হয়ে দংশন করিবে, আগুনের চুড়ি পরিধান করা হবে, সোনা-রুপার উত্তপ্ত পাত দিয়ে কপাল-পার্শ্বদেশ ও পিঠে দাগ দেয়া হবে।
যাকাতযোগ্য সম্পদের শ্রেণিবিন্যাসঃ-
১. স্বর্ণ, রৌপ্য, অলংকার,নগদ অর্থ ও ব্যাংক ব্যালেন্স।
২.ব্যবসায়িক সম্পদ।
৩.পশু সম্পদ।
৪.ভূসম্পদ।
৫.ভূমি থেকে প্রাপ্ত গুপ্তধন।
৬.আর্থিক ইন্সট্রুমেন্টঃ শেয়ার,সিকিউরিটিজ,বন্ড,প্রাইজবন্ড,বিমা ইত্যাদি।




Comments

Popular posts from this blog

জান্নাতী "হুর" কেমন হবে?

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-৪র্থ পর্ব

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-৫ম পর্ব