"চাইতে হবে কেবল আল্লাহর কাছে"।
একজন মুমিনের দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ লাভের অপরিহার্য শর্ত হচ্ছে আল্লাহর কাছে দোয়া করা। কারণ হাদিসে দোয়াকেই বলা হয়েছে ইবাদত। পবিত্র কোরআনের প্রথম সুরা, যাকে বলা হয়েছে উম্মুল কোরআন বা কোরআনের মূল বা সারমর্ম, সেই সুরা ফাতিহাতেই মহান আল্লাহ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে আমরা তার কাছে হেদায়েত বা সঠিক পথ পাওয়ার জন্য দোয়া করব। শুধু তাই নয়, এই সুরা তথা দোয়াকে ইমানের পর সবচেয়ে বড় ইবাদত সালাতের মধ্যে জুড়ে দিয়েছেন, যা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে বহুবার আমরা বলে থাকি। এখান থেকেই আমরা দোয়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারি। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে দোয়া করার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সুরা বাকারার ১৮৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, 'যখন আমার বান্দা তোমার কাছে আমার সম্বন্ধে জানতে চাইবে, তখন তুমি বলে দিও যে, আমি নিকটেই আছি; প্রার্থনাকারীর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে থাকি। সুতরাং তারাও যেন আমার আহ্বানে সাড়া প্রদান করে এবং আমার প্রতি ইমান আনে, তাহলে তারা সঠিক পথপ্রাপ্ত হবে।' সুরা গাফিরে বলা হয়েছে- 'আর তোমার রব বলছেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি সাড়া দেব। নিশ্চয়ই যারা অহঙ্কার করে আমার ইবাদত থেকে বিরত থাকবে, অচিরেই তারা জাহান্নামে লাঞ্ছিত অবস্থায় দাখিল হবে' (আয়াত : ৬০-৬১)। দোয়াই যে ইবাদত, রাসুল (সা.) উপরোক্ত আয়াত উল্লেখ্য করে তার দলিল প্রদান করেছেন (তিরমিজি)। সুরা ইসরায় আল্লাহ বলেন- আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহ কিংবা রহমানের কাছে প্রার্থনা করো; যে নামেই তার কাছে প্রার্থনা করো (আয়াত : ১১০)। সুরা আরাফে বলা হয়েছে, আল্লাহর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম; সেগুলো দিয়ে তোমরা তাকে ডাক (আয়াত :১৮০)। কোরআনের অসংখ্য আয়াতে এভাবেই দোয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। নিজের জন্য, সন্তানের জন্য, সন্তান লাভের জন্য, মাতাপিতার জন্য, পরিবারের জন্য, আত্মীয়দের জন্য, অপর মুসলিম ভাইয়ের জন্য কীভাবে দোয়া করতে হবে, তাও কোরআনে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোয়ার শব্দগুলোও আল্লাহ বলে দিয়েছেন। বিপদে পতিত হলে কিংবা অসুস্থ হলে কীভাবে আল্লাহকে ডাকতে হবে, কিছু প্রয়োজন হলে তা কীভাবে চাইতে হবে, তা বলে দিয়েছেন। নবী-রাসুলগণ (আ.) আল্লাহর কাছে যেসব বলে দোয়া করেছেন, সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে কোরআনে উল্লেখ্য করা হয়েছে। নবুয়তি দায়িত্বে সফলতার জন্য দোয়া ছিল তাদের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। বিভিন্ন সুরায় দোয়াগুলো বর্ণিত হয়েছে। যেমন- ইবরাহিমের (আ.) দোয়া সুরা ইবরাহিমের ৩৭, ৪০ ও ৪১ নম্বর আয়াতে; নুহর (আ.) দোয়া সুরা আম্বিয়ার ৭৬, ৭৭ এবং সুরা নুহের কয়েকটি আয়াতে; মুসার (আ.) দোয়া সুরা ত্ব-হার ২৫-৩৬, সুরা কাসাসের ১৬-১৭ এবং সুরা ইউনুসের ৮৮ ও ৮৯ নম্বর আয়াতে; আইউবের (আ.) দোয়া সুরা আম্বিয়ার ৮৩-৮৪ নম্বর আয়াতে; জাকারিয়ার (আ.) দোয়া সুরা মারইয়ামের ১-৯ আয়াতে; ঈসা ইবনে মারইয়ামের (আ.) দোয়া সুরা মায়েদাহর ১১৪-১১৫ আয়াতে; ইয়াকুবের (আ.) দোয়া সুরা ইউসুফের ৮৪-৮৭ আয়াতে; ইউসুফের (আ.) দোয়া ইউসুফের ৩৩-৩৪ আয়াতে; ইউনুসের (আ.) দোয়া আম্বিয়ার ৮৭-৮৮ আয়াতে; সুলাইমানের (আ.) দোয়া সুরা সোয়াদের ৩৫-৩৬ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। এভাবে দেখা যায়, পবিত্র কোরআন জুড়ে রয়েছে নবীদের দোয়া। শুধু তাই নয়, কোরআন স্বয়ং একটি দোয়ার সমাহার। দোয়ার গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
নিম্নে তেমনি কিছু হাদিস উল্লেখ্য করা হলো- ১. আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক মর্যাদার কাজ আর কিছু নেই (তিরমিজি); ২. আল্লাহ লজ্জাশীল ও দানশীল; বান্দা তার দিকে দুই হাত তুললে তিনি হাতগুলোকে শূন্য ফিরিয়ে দেন না (আবু দাউদ, তিরমিজি); ৩. একমাত্র দোয়াই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে (তিরমিজি); ৪. মানুষ মারা যাওয়ার পর তার আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমলের সওয়াব তার আমলনামায় পৌঁছতে থাকে; সাদকাহ জারিয়াহ, উপকারী ইলম এবং সৎ সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে (মুসলিম); ৫. যার জন্য দোয়ার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে, তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় দোয়া হচ্ছে সুস্থতার জন্য। আর আপতিত বিপদ ও অনাপতিত বিপদ উভয়ের জন্যই দোয়া উপকারী (তিরিমিজি); ৬. সর্বাধিক অক্ষম সে, যে দোয়া করতে অক্ষম (তাবারানি); ৭. যে চায়, দুঃখের সময় আলল্গাহ তার ডাকে সাড়া দিক, সে যেন সুখের সময় বেশি বেশি দোয়া করে (তিরমিজি); ৮. পৃথিবীতে এমন কোনো মুসলিম নেই, যার দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না; হয় সঙ্গে সঙ্গেই তার দোয়া কবুল করেন, না হয় তার জন্য জমা রাখেন নতুবা দোয়ার বিনিময়ে সমপরিমাণ পাপ থেকে তাকে বাঁচিয়ে দেন। তবে পাপ কাজ কিংবা আত্মীয়তা ছিন্ন করার দোয়া কবুল করা হয় না। এক লোক বললেন, আমরা যদি দোয়া বাড়িয়ে করি? রাসুল বললেন, তবে আল্লাহও বাড়িয়ে দেবেন (আহমাদ, তিরিমিজি); ৯. হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত হয়েছে- আল্লাহ বলেন, ওহে আমার বান্দারা, তোমরা প্রত্যেকেই পথভ্রষ্ট, সে ব্যতীত, যাকে আমি হেদায়েত দান করি; সুতরাং তোমরা আমার কাছে হেদায়েত চাও, আমি তোমাদের সঠিক পথ দেখাব। তোমরা প্রত্যেকেই ক্ষুধার্ত, সে ব্যতীত, যাকে আমি আহার করাই; সুতরাং তোমরা আমার কাছে খাদ্য প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের আহার করাব। তোমরা প্রত্যেকেই বস্ত্রহীন, সে ব্যতীত, যাকে আমি পরিধান করাই। অতএব আমার কাছে বস্ত্র চাও, আমি তোমাদের পরিধান করাব। তোমরা দিনরাত পাপ করো আর আমি পাপ ক্ষমা করি; তাই আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব (তিরমিজির বর্ণনায় এও রয়েছে, তোমরা প্রত্যেকেই দরিদ্র, যাকে আমি ধনী বানাই, সে ব্যতীত; সুতরাং আমার কাছে চাও, আমি তোমাদের রিজিক দেব)। আমার বান্দারা, তোমরা পূর্বের এবং পরের সব জিন ও মানুষ একটি ময়দানে দাঁড়িয়ে যদি আমার কাছে চাও এবং আমি প্রত্যেককেই তার চাহিদা অনুযায়ী প্রদান করি। এতে আমার ভাণ্ডার থেকে ততটুকুই খালি হবে, যতটুকু সমুদ্রে একটি সুই ঢুকিয়ে উঠানোর পর সমুদ্রের পানি খালি হয় (মুসলিম)। দোয়া হচ্ছে মুমিনের অস্ত্র, দ্বীনের স্তম্ভ এবং আসমান ও জমিনের আলো (মুস্তাদরক হাকিম)।
নিম্নে তেমনি কিছু হাদিস উল্লেখ্য করা হলো- ১. আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক মর্যাদার কাজ আর কিছু নেই (তিরমিজি); ২. আল্লাহ লজ্জাশীল ও দানশীল; বান্দা তার দিকে দুই হাত তুললে তিনি হাতগুলোকে শূন্য ফিরিয়ে দেন না (আবু দাউদ, তিরমিজি); ৩. একমাত্র দোয়াই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে (তিরমিজি); ৪. মানুষ মারা যাওয়ার পর তার আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমলের সওয়াব তার আমলনামায় পৌঁছতে থাকে; সাদকাহ জারিয়াহ, উপকারী ইলম এবং সৎ সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে (মুসলিম); ৫. যার জন্য দোয়ার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে, তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় দোয়া হচ্ছে সুস্থতার জন্য। আর আপতিত বিপদ ও অনাপতিত বিপদ উভয়ের জন্যই দোয়া উপকারী (তিরিমিজি); ৬. সর্বাধিক অক্ষম সে, যে দোয়া করতে অক্ষম (তাবারানি); ৭. যে চায়, দুঃখের সময় আলল্গাহ তার ডাকে সাড়া দিক, সে যেন সুখের সময় বেশি বেশি দোয়া করে (তিরমিজি); ৮. পৃথিবীতে এমন কোনো মুসলিম নেই, যার দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না; হয় সঙ্গে সঙ্গেই তার দোয়া কবুল করেন, না হয় তার জন্য জমা রাখেন নতুবা দোয়ার বিনিময়ে সমপরিমাণ পাপ থেকে তাকে বাঁচিয়ে দেন। তবে পাপ কাজ কিংবা আত্মীয়তা ছিন্ন করার দোয়া কবুল করা হয় না। এক লোক বললেন, আমরা যদি দোয়া বাড়িয়ে করি? রাসুল বললেন, তবে আল্লাহও বাড়িয়ে দেবেন (আহমাদ, তিরিমিজি); ৯. হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত হয়েছে- আল্লাহ বলেন, ওহে আমার বান্দারা, তোমরা প্রত্যেকেই পথভ্রষ্ট, সে ব্যতীত, যাকে আমি হেদায়েত দান করি; সুতরাং তোমরা আমার কাছে হেদায়েত চাও, আমি তোমাদের সঠিক পথ দেখাব। তোমরা প্রত্যেকেই ক্ষুধার্ত, সে ব্যতীত, যাকে আমি আহার করাই; সুতরাং তোমরা আমার কাছে খাদ্য প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের আহার করাব। তোমরা প্রত্যেকেই বস্ত্রহীন, সে ব্যতীত, যাকে আমি পরিধান করাই। অতএব আমার কাছে বস্ত্র চাও, আমি তোমাদের পরিধান করাব। তোমরা দিনরাত পাপ করো আর আমি পাপ ক্ষমা করি; তাই আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব (তিরমিজির বর্ণনায় এও রয়েছে, তোমরা প্রত্যেকেই দরিদ্র, যাকে আমি ধনী বানাই, সে ব্যতীত; সুতরাং আমার কাছে চাও, আমি তোমাদের রিজিক দেব)। আমার বান্দারা, তোমরা পূর্বের এবং পরের সব জিন ও মানুষ একটি ময়দানে দাঁড়িয়ে যদি আমার কাছে চাও এবং আমি প্রত্যেককেই তার চাহিদা অনুযায়ী প্রদান করি। এতে আমার ভাণ্ডার থেকে ততটুকুই খালি হবে, যতটুকু সমুদ্রে একটি সুই ঢুকিয়ে উঠানোর পর সমুদ্রের পানি খালি হয় (মুসলিম)। দোয়া হচ্ছে মুমিনের অস্ত্র, দ্বীনের স্তম্ভ এবং আসমান ও জমিনের আলো (মুস্তাদরক হাকিম)।
.jpeg)
Comments