Posts

Showing posts from October, 2019

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-৫ম পর্ব

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর বানিজ্যঃ- উম্মুল মু'মিনীন হযরত খাদিজা (রাঃ) ধনী গৃহের একমাত্র আদরের দুলালী হলেও তাকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের ভিতর দিয়েই যৌবনের প্রথম অংশ অতিক্রম করতে হয়েছিল। কাজেই তিনি শোক-দুঃখ ও বিপদাপদ সহ্য করার মতো যথেষ্ট মানসিক বলও অর্জন করেছিলেন। তাই বিধবা ও পিতৃহারা হয়ে প্রথম দিকে একটু বিচলিত হয়ে পড়লেও একেবারে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েননি তিনি। হযরত খাতিজা (রাঃ) এর পৈতৃক ধন সম্পদ ছিল প্রচুর। তদুপরি তার দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর পর তার বিরাট সম্পত্তি ও ধন দৌলতও তিনি লাভ করেন। যেহেতু তার স্বামী আতিকের অন্য কোন উত্তরাধিকারী ছিল না। সৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন এবং তার সব সদ্ব্যবহার সম্বন্ধে হযরত খাদিজা (রাঃ) এর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ছিল। তবে তার পিতার ব্যবসায়-বাণিজ্যের স্থান অধিকাংশই আরবের বাইরে বিভিন্ন দেশে ছিল বলে প্রথম দিকে তিনি সেসব স্থানের ব্যবসায় পরিচালনার ব্যাপারে বেশ একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু অতি অল্পদিনের মধ্যেই তিনি সেসব ব্যবসার সুষ্ঠু সমাধান করতে সমর্থ হন। কতিপয় বিশ্বাসী ও সুদক্ষ কর্মচারী নিযুক্ত করে তিনি বিভিন্ন স্থানের ব্যবসা পরিচালনার ব্যবস্থা করে ফেললেন। বিচক্ষণ ব্য...

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-৪র্থ পর্ব

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর বিবাহঃ- তখন কি তিনি একটিবারও চিন্তা করেছিলেন যে, তার এ স্বামী বিয়োগের মধ্যেই নিহিত রয়েছে তার জন্য ইহকাল ও পরকালের সর্বাধিক মঙ্গল। তিনি কি তখন জানতেন যে দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের জীবন সঙ্গিনী হবেন তিনি। মেয়ের করুণ চেহারার দিকে তাকাতে পারে না খুওয়াইলিদ। দু'চোখ অশ্রুতে ভরে যায় তার মেয়ের ভাগ্য বিপর্যয়ের কথা চিন্তা করে। এত দেখে শুনে সুযোগ্য পাত্রের হাতে কন্যা সমর্পন করেন তিনি। মেয়েও তার সুখী হয় কিন্তু সে সুখ স্থায়ী হয় না। নিজেকেই অপরাধী বলে মনে করেন তার কন্যার দুর্ভাগ্যের জন্য। মনে মনে ভাবেন তিনি হয়তো-বা আমার নিজের কোন পাপের ফলেই মেয়ের কপাল ভেঙে যায় পুনঃ পুনঃ। মেয়ের দাম্পত্য সুখের মাথায় আঘাত তুলতে পারেন না তিনি মোটেই। দশটি নয়, পাঁচটি নয়, একটি মাত্র কন্যা তার। কেন তার অদৃষ্টে এমন দুর্যোগের ঘনঘটা নেমে আসে বারবার। খাদিজার মুখের দিকে তাকালেই দু'চোখ অশ্রুতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় খুওয়াইলিদের। পূর্ণ যুবতী খাদিজা সবে মাত্র দুটি সন্তানের মাতা। কি করে তাকে এমন ভাবে ঘরে রাখা যায়। আরবে সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী, শিক্ষিত, সম্মানী ও উচ্চ বংশের লোক খুওয়াইলিদ। তার...

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-৩য় পর্ব

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর বিবাহঃ- উম্মুল মু'মিনীন খাদিজা (রাঃ) রূপে-গুণে, চরিত্রে, বংশ মর্যাদায়, বিদ্যা বুদ্ধিতে ও ধন দৌলতে সর্বদিক দিয়েই ছিলেন তৎকালীন আরবের সেরা রমণী। বিপুল ধন-ভান্ডারের মালিক খুওয়াইলিদের একমাত্র স্নেহের দুলালী ছিলেন তিনি। এজন্য তিনি যুবতী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুরাইশ বংশের বহু উচ্চ পরিবার হতে তার বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। যখন যেখান হতেই বিয়ের প্রস্তাব আসছিল, খাদীজার পিতা খুওয়াইলিদ তার প্রত্যেকটির দোষ-গুণ সম্বন্ধে বিবেচনা করে দেখছিলেন। যেহেতু হযরত খাদিজা (রাঃ) ছিলেন তার একমাত্র আদরের দুলালী। অবশেষে তুলনামূলকভাবে আবু হালা ইবনে-জাহ্রাহ নামক জনৈক কুরাইশ বংশীয় যুবককেই তার কন্যার জন্য সর্বাপেক্ষা অধিক যোগ্য পাত্র বিবেচনা করে তার হাতেই খুওয়াইলিদ তার একমাত্র কন্যা খাদিজাকে সমর্পন করেন। হযরত খাদিজা (রাঃ) আবু হালা কে স্বামী রুপে পেয়ে সত্যিই সুখী হয়েছিলেন। যেহেতু আবু হালা ছিলেন পরম সুন্দর, সুশিক্ষিত ও অত্যন্ত বিনয়ী। আপু হালার ঔরসে হযরত খাদিজার একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারা পুত্রের নাম রাখলেন হিন্দ। তিনি পরবর্তীকালে হযরত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এ...

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-২য় পর্ব

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর পরিচয়ঃ- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিতা মাতার পূর্ব পুরুষগন কয়েক পুরুষ পর্যন্ত উর্ধ্বে গিয়েই হযরত খাদিজা (রাঃ) এর পিতা-মাতার উভয়ের বংশের সাথে মিলিত হয়েছে। সুতরাং হযরত খাদিজা (রাঃ) যে বংশ মর্যাদায় সর্ব দিক দিয়েই শ্রেষ্ঠ ছিলেন সে কথা বলাই বাহুল্য। কুরাইশ বংশ ছাড়াও আরব দেশে তৎকালে আরো অনেক বংশ ছিল। কিন্তু শিক্ষা-দীক্ষায় ধন-সম্পদে ও মান-সম্মানের কুরাইশ বংশ দের সামনে অন্য কোন বংশেরই মাথা তুলে দাঁড়াবার ক্ষমতা ছিল না। হেজাজ ছিল সারা আরবের সভ্যতা ও সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল। পবিত্র খানায়ে কাবা হেজাজে অবস্থিত ছিল বলে শুধু আরবেই নয়, বরং আরো অন্যান্য দেশের লোকের নিকটে হেজাজ পূত পবিত্র পূণ্যভূমি বলে বিবেচিত ছিল। কুরাইশ বংশের লোকগণই বংশ পরম্পরায় চিরদিন খানায়ে কাবার তত্ত্বাবিধানসভা করে আসছিল। ফলে আরবের সবাই কুরাইশদিগকে বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করত। কুরাইশদের মধ্যে আবার অনেকগুলো গোত্রের লোকের মর্যাদা সম্মান ছিল না। কুরাইশদের মধ্যে হাশেমী বংশ ছিল মান মর্যাদা ও প্রভাল প্রতিপত্তিতে সকালের নেতৃস্থানীয়। এ হাশেমি বংশেই আমাদের নুর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল...

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী-১ম পর্ব

হযরত খাদিজা (রাঃ) এর পরিচয়ঃ- উম্মুল মোমেনিন হযরত খাদিজা (রাঃ)৫৫৫. খ্রিস্টাব্দে মরুময় আরব দেশের মক্কা নগরে সুবিখ্যাত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন.. তার পিতার নাম ছিল খুওয়াইলিদ ও মাতার নাম ফাতেমা.. মাতা ফাতেমা ও ছিলেন সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশীয় রমণী.. আরব দেশে তখন প্রধান দুটি গোত্র বিখ্যাত ছিল.. তার মধ্যে একটির নাম আদনান ও অপরটির নাম কাহতান। আদনান ছিল একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তির নাম,তারই নামানুসারে তার বংশাবলিকে বলা হত আদনান বংশ..এ আদনান বংশের দশম পুরুষের নাম ছিল ফিহিন ইবনে-মালিক..তিনি সর্ব সাধারণের নিকট কুরাইশ নামে পরিচিত ছিলেন.. কুরাইশ বংশের ষষ্ঠ পুরুষের নাম ছিল কুসাই ইবনে-কিলাব.. তিনি কুরাইশ বংশীয়দের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। কুসাই ইবনে-কিলাবের তিন পুত্র ছিল। যথা- আব্দুল মান্নাফ,আবদুদ্দার ও আবু ওজ্জা। হযরত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্ব পুরুষ এবং হযরত খাদিজা (রাঃ)-এর পূর্ব পুরুষ কুসাই ইবনে কিলাব পর্যন্ত একই ছিল.. কসাই ইবনে কিলাবের এক পুত্র আব্দুল মান্নাফ রাসুল (সাঃ) এর পূর্ব পুরুষ এবং অপর পুত্র আবুল ওজ্জা হযরত খাদিজা (রাঃ) এর পূর্ব পুরুষ। ক...